The Tempest Summary in Bangla Part-3
একথা শুনে অ্যান্টেনিও অপলক চোখে তাকিয়ে থেকে বলেন, ভাল কথা! আপনিই বলুন, Naples এর পরবর্তী ক্ষমতায় উত্তরাধিকারী কে হতে পারে? এবার সেবাষ্টিয়ান নির্দ্বিধায় উত্তর দিলেন — ক্লারিবেল , আমার একমাত্র ভাইঝি ক্লারিবেল। অ্যান্টেনিও অসম্মতি জানিয়ে বলেন না। একেবারেই অসম্ভব। ক্লারিবেল টিউনিসের রাণী৷ দূরদেশে তার বাস। তার ঠিকানা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আর যার জন্যে আমাদের বেশ ক’জন লোক মৃত্যুবরণ করেছে, যার জন্যে আমরা কয়েকজন এরম চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছি। আমাদের কাছে এটা অতীত কোন ভূমিকা ছাড়া কিছুই নয়। তাই ভবিষ্যতকে গড়ে তুলতে হবে আমাদের দুজনকেই। আমরাই বর্তমান আর ভবিষ্যৎ। এবার সেবাষ্টিয়ান উত্তেজিত হয়ে বলেন, মহামান্য ডিউক এরকম কথা আপনার মুখে অন্ততঃ মানায় না।
ক্লারিবেল রাণী হোক না কেন, দুই দেশের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান থাকলেও সেই নেপলসের উত্তরাধিকারিণী। কথাটা তো মিথ্যা নয়৷ অ্যাণ্টেনিও অবিচলিত শান্ত কণ্ঠে বললেন, আপনি কিন্তু ভুলই করছেন রাজভ্রাতা। একবারটি ভাল করে ভেবে দেখুন, সবার ঘুম হয়ে উঠেছে আপনার কৃতকর্মের সহায়ক। সেবাষ্টিয়ান নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, মনে পড়ছে, আপনি আপনার দাদা প্রস্পেরোকে যেভাবে সরিয়ে দিয়েছিলেন সিংহাসন থেকে আপনার বিবেক কি তাতে সায় দেয়, বলুন? বিবেক? ঐ শব্দটি কিন্তু আমার অভিধানে নেই। রাজা অ্যালনসো এখানে যে মাটিতে শয্যা নিয়েছেন মিলানের স্থানচ্যুত ডিউক প্রস্পেরো কিন্তু তার চেয়ে ভাল জায়গায় শুয়ে দিন কাটাচ্ছেন না। ইচ্ছে করলে এই মুহূর্তে আমি তরোয়ালের সাহায্যে তাকে অবশ্যই খতম করে দিতে পারি। আপনিও ইচ্ছা করলে কিন্তু অনায়াসেই পারেন।
এবার সেবাষ্টিয়ান অ্যান্টেনিওর দৃষ্টাত্তকে নিজের ক্ষেত্রে তুলে ধরে বলেন — হে বন্ধু! আপনি যেভাবে মিলানের ডিউক হয়েছেন , আমি সেই পথেই নেপলসের রাজা হব। দেখে নেবেন , অবশ্যই হব। নেপলসের রাজাকে দেয় রাজস্ব থেকে আপনাকে মুক্তি দেব। আসুন আমরা হাত মিলাই। আজ থেকে আমরা বন্ধু হলাম। এবার উভয়ে একসঙ্গে তরোয়াল কোষমুক্ত করে। অ্যান্টেনিও সহাস্যে তাকে সাবধান করে বলেন — বন্ধু, মনে যেন থাকে আমি যখনই হাত তুলবো সেই মুহূর্তে আপনার তরোয়াল যেন গঞ্জালের কাঁধে পড়ে। এক কোপে কাজ হাসিল। তখনই প্রস্পেরোর অশরীরী স্ত্রী এরিয়েল অদৃশ্য অবস্থায় নিদ্রিত গঞ্জালোর কানে কানে বললেন, তোমরা ঘুমচ্ছো! আর যে দুজন জেগে রয়েছে তারা তোমাদের হত্যা করবার ফন্দি আঁটছে। তাই জেগে নিজেদের রক্ষা করতে চেষ্টা কর। অমাত্য গঞ্জালো আচমকা ঘুম থেকে উঠে রাজাকে ডাকলেন। দেবদূতগণ মহান রজাকে রক্ষা করুন। তাকে প্রাণে বাঁচান।
The Tempest Bangla Anubad
রাজা উঠেপড়ে তরবারি হাতে সোষ্টিয়ান ও অ্যাণ্টেনিওকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন — কি, ব্যাপার কি, বল তো? তোমাদের উত্তেজিত দেখাচ্ছে কেন? উত্তরে সেবাষ্টিয়ান বিনীত স্বরে জানান, তারা জেগে পাহারারত ছিলেন। একটা বিকট চিৎকার আচমকা শুনে তরবারি অসিমুক্ত করে অপেক্ষা করছে বিপদে আত্মরক্ষা করবার জন্যে। রাজা অ্যালানসো বাধ্য হয়ে জানান , কই কিছু শুনি নি তো। গঞ্জালোও রাজার কথার পুনরাবৃত্তি করে, আপন মনে বলে মনে হল কে যেন কানে কানে আমাকে বলে গেল উঠে পড়তে। সাবধানতা অবলম্বন করতে। রাজার নির্দেশে সবাই তখন সে স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র গিয়ে রাজপুত্রের খোঁজ করতে লাগলেন। অশরীরী এরিয়েল অলক্ষ্যে থেকে প্রস্পেরোকে উদ্দেশ্য করে বলেন — স্বামী! আপনার আদেশ আমি যথাযথভাবে পালন করেছি।
এখন নেপলসের রাজা অ্যালানসো তার পুত্রের খোঁজে গমন করেছেন। আর কোন সমস্যা নেই। আমি পিছনে আছি। আর দেরী না করে যত শীঘ্র সম্ভব যাত্রা করুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বজ্রনির্ঘোষ শুরু হয়ে যায়। ক্যালিবান এখন প্রস্পেরোকে অভিশাপ দিতে দিতে কাঠের বোঝা মাথায় নিয়ে পথ চলে। বলে সংক্রামক রোগ যত আছে সবই সূর্যদেব গ্রহণ করে পঙ্কিল জলাশয় এবং সমতল ভূমি থেকে, সে সব রোগ ঐ প্রস্পেরোর মাথায় ঝরে পড়ুক। তার অশরীরী আমার কথা শুনে থাকলেও আমি অভিশাপ দিতে ছাড়ব না। সর্বদা অকারণে আমার ঘাড়ে ওদের প্রয়োগ করা হয়। আমাকে দুঃখ - যন্ত্রণায় পাগল করে তোলে। রাজার ভাঁড় ট্রিনকুলোকে আসতে দেখে ক্যালিবান ভাবে বুঝি বা প্রস্পেরোর নিয়োজিত কোন অপদেবতা আসছে। এই ভেবে সে কান্ঠা বোঝা মাটিতে ফেলে পথের ধারে অন্ধকারে শুয়ে পড়ে । ঝড়ের বেগ সমান তালেই চলেছে। শুধু কালো মেঘ আর দূরের গাছগুলোকে ঝাপসা দেখা যায় বিদ্যুতের ঝলকানিতে। রাজার ভাড় ট্রিনকুলো আশ্রয়ের প্রত্যাশায় উদ্ভ্রান্তের মত ছুটতে ছুটতে সামনে শুয়ে থাকা ক্যালিবানকে দেখে থমকে দাঁড়ায়। ভাবে এটা কি কোন মানুষ, না মাছ? মানুষের মত পা কিন্তু পাখনাগুলো মাছের মত। মাছ, মানুষ বা দৈত্য তার কিছুই বুঝতে পারা যাচ্ছে না। ঝড়ের বেগ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বজ্রপাতও ঘন ঘন হচ্ছে। এখানে লুকিয়ে থাকা ছাড়া গত্যন্তর নেই। এমন সময় সে পথে খানসামা ষ্টেকানো মদ টেনে মাতাল হয়ে গলা ছেড়ে গান গাইতে গাইতে টলতে টলতে আসে। ক্যালিবান এতক্ষণ মুখ বুজে সহ্য করছিল। আর পারল না। মাতালকে দেখে ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে বলে, আমাকে আর কষ্ট দিও না। আর আমি পারছি না। এবার ষ্টেকানো ক্যালিবানকে দেখে ভাবে বুনো আর রেড ইণ্ডিয়ানরা বুঝি বোকা বানাবার চেষ্টা করছে। ওরা জানে না এ বান্দা জলে ডুবেও মরেনি।
আর একটা চার পা ওয়ালা জীব দেখে ভয় পাবার আশঙ্কা করে? সেরা মানুষও যদি চার পায়ে হাঁটে তবু সে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে না, এই প্রবাদ তো মিথ্যা হতে পারে না। তাই আবার প্রাণ থাকতে বেকায়দায় ফেলতে পারবে না দানবেরা আর মানুষ যেই হোক না কেন। এবার ক্যালিবান কাতর কণ্ঠে বলে ওঠে — অপদেবতা আমাকে নিদারুণ কষ্ট দিচ্ছে। কথাটা শোনামাত্র ষ্টোকানো ক্যালিবানের দিকে তাকিয়ে ভাবে, এ কী! এ যে আমাদের ভাষায় কথা বলছে। এটাকে সুস্থ অবস্থায় পাকড়াও করে যদি নেপলসে নিয়ে যাওয়া যায় তবে পৃথিবীর যে কোন শাসনকর্তা সম্রাটের একটা অভিনব উপঢৌকনের সামিল হবে।
আবার ক্যালিবান কাতর কণ্ঠে বলে, আর যন্ত্রণা দিও না আমাকে। আমি যত তাড়াতাড়ি পারি মাথায় করে কাঠ বয়ে নিয়ে যাবো। দেরী করব না। ষ্টেকানো ভাবে দানবটার বোধ হয় ফিটের ব্যামো আছে। তাই খানিকটা মদ ওকে গিলিয়ে দেয়, ভাবে মাতাল হলেই ফিট রোগ সেরে যাবে। পরে বিচিত্র এই জীবটাকে নেপলসের কারো কাছে গছিয়ে দিয়ে মোটা পারিতোষিক লাভ করা যাবে। ট্রিনকুলো এবার ষ্টেকানোকে দেখে মাতাল বন্ধুর মতিগতি ভাল নয় বুঝে অপেক্ষাকৃত জোর গলায় বলে, তুমি য়দি ষ্টোকানো হও তবে আমাকে ছুঁয়ে আমার সঙ্গে নির্ভয়ে কথা বল। কারণ আমি ট্রিনকুলো কথা বলছি। শোন, আমি ওটাকে বজ্রাঘাতে মৃত বলে মনে করেছিলাম। ঝড়ের ভয়ে মরা মানুষটার পোষাকের আড়ালে লুকিয়েছিলাম। দেখছি তুমি আর আমি জাহাজডুবিতে মরে যাইনি। উভয়েই বেঁচে আছি। এবার ক্যালিবান বলে এরা যদি অপদেবতা না হয়, তবে অবশ্যই স্বর্গের দেবতা। আমি সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই। মাথা নত করে বশ্যতা স্বীকার করি। ষ্টেকানো তখন জানায় যে, জাহাজ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া মদের বোতলের বাক্সের ওপর ভেসে ভেসে তীরে উঠছি। সেই বাক্স থেকে একটা বোতল নিয়ে এখানে এসেছি। এবার ক্যালিবান হাঁটু গেড়ে ষ্টেকানোর সামনে বসলে ষ্টেকানো ক্যালিবানের কুশল জিজ্ঞাসা করে।
ক্যালিবান বলে বোতলের নামে শপথ করে বলছি, আমি আপনার প্রজা হবো। এই সুবিধা শুধু পার্থিব নয়। আপনারা কি স্বর্গ থেকে আসেননি, আপনারা বলুন স্বর্গচ্যুত দেবতা নন আপনারা? ষ্টেকানো মজা করে বলল, ওসের দানব! আমরা চাঁদ থেকে আসছি। এক সময় আমি চাঁদের কেন্দ্রস্থলে থাকতাম। ক্যালিবান বলে, চাঁদে মনে হচ্ছে আমি আপনাকে দেখেছি। আপনাকে আমি পূজা করতে চাই। আমার মা চাঁদে আপনাকে আপনার পাপ ও কুকুরটাকে দেখিয়েছেন। আমিও আপনাকে এই দ্বীপের সবকিছু দেখাবো। আপনি আমার উপাস্য দেবতা হন। আমি আপনার কাছে সর্বদা নতজানু হয়ে থাকব।
এবার ষ্টেকানো তাকে ডেকে শপথ গ্রহণ করাচ্ছে দেখে ট্রিনকুলো হেসে ফেটে পড়ে বলে, একটা মাতাল দানবকে নিয়ে কিসের এত বাড়াবাড়ি। ষ্টেকানো গম্ভীর স্বরে বলে, আর বেশী কথা না বলে আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে চল। আর দেরী করতে চাই না। এবার ক্যালিবান নিজের মনে গান গাইতে গাইতে তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে চলে। এদিকে রাজকুমার ফার্দিনান্দ মর্যাদা জলাঞ্জলি দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে শুকনো কাঠ বয়ে নিয়ে আসে। সে ভাবে অনেক সময় ছোট কাজও মহৎ পরিণামের সূচনা করে। আমার কাছে কোন ছোট কাজ ঘৃণা বলে মনে হয় না। মিরান্দার আপনজনের মত আচরণ যেন নতুন জীবন দান করছে আমাকে। জীবনকে আনন্দময় করে তুলেছে । যার বাবা এমন নির্দয় ও হৃদয়হীন তার মেয়ে এমন করুণাময়ী হয় কেমন করে ভেবে পাই না। এদিকে প্রস্পেরোর গুহার মুখে দাঁড়িয়ে কাঠ বহনরত রাজকুমারকে দেখে মিরান্দা উন্মাদিনীর মত ছুটে আসে।
রাজকুমারের কাঠের বোঝাটি নামাতে সাহায্য করে কাঁদো কাদো মুখে বলে এত কঠিন কাজ করো না। আমার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসছে। ঐ কাঠের গুড়িগুলো সব আমি পুড়িয়ে দেবো। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। দয়া করে একটু বিশ্রাম করো। বাবা এখন পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত। দীর্ঘ তিনটি ঘণ্টা আমি ও তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারি। রাজকুমার হাসিমুখে জানাল— প্রিয়তমে, তোমার বাবার নির্দেশে আমাকে সন্ধ্যার আগেই এই কাজটি শেষ করতে হবে। তাই বিশ্রাম করে সময় কাটালে তার আদেশ তো প্রতিপালিত হবে না। তাই আমাক তাড়াতাড়ি কাজ করতে হবে। মিরান্দা এবার চোখের জল মুছে এগিয়ে এসে বলে, আমিই তোমার সব কাজ সম্পূর্ণ করবো। তুমি এখন বিশ্রাম কর প্রিয়তম।
রাজকুমার মিরান্দার বিষণ্ণ মুখের দিকে তাকিয়ে বলে, আমি আজ পর্যন্ত অনেক রমণীকে দেখেছি। কারো কারো মধুর কণ্ঠ আমাকে মুগ্ধ করেছে। তবে সম্পূর্ণ সত্তার বিকাশযুক্ত এমন রমণী এর আগে আর চোখে পড়েনি। তুমি এতই সম্পূর্ণ যে তুমি অনন্যা এবং অতুলনীয়া। মিরান্দা ভাবাবেগে জানায়, আমার শ্রেণীর কাকেও যে আমি চিনি না , জানি না। দর্পণের মাধ্যমে দেখা নিজের মুখ ছাড়া আর কোন মুখই মনে আনতে পারি না। আমার পিতা ছাড়া অন্য কাকেও পুরুষ বলে জানতাম না। আজই মাত্র তোমাকে জানতে পেরেছি। তোমাকে ছাড়া আর পুরুষকে নিজের সঙ্গী হিসেবে কল্পনাও করতে পারি না। আর আমার পিতার কঠোর নির্দেশ ভুলে গেছি। তোমার কাছে আর আমার এখন গোপনীয় বলতে কিছুই নেই। ফার্দিনান্দ বলে, মিরান্দা আমি যে একজন রাজপুত্র সে পরিচয় আমি এখানে দেবো না। তবে এ কাঠের বোঝা বওয়া আমি সহ্য করতে পারছি না।
যে মুহূর্তে আমি তোমাকে দেখেছি সেই মুহূর্তেই আমার মনে হয়েছে আমার হৃদয় যদি তোমার সেবার সুযোগ পেত। আর এই একটি কারণেই আমি কঠোর পরিশ্রম করতে কোন দিনই বিমুখ হইনি। আমায় কি তুমি ভালবাসো? পৃথিবীতে যা কিছু আছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ভালবাসি তোমায়। আনন্দে মিরান্দায় দুচোখ জলে ভরে আসে। কিন্তু কিছু বলার আগেই প্রস্পেরোর কথা শোনা যায়। বলে দুজন প্রেমিকের শুভদৃষ্টি বিনিময়। উভয়ের হৃদয় বিনিময়ের ওপর স্বর্গ থেকে দেবতাদের আশীর্বাদ ঝরে পড়ুক। ফার্দিনান্দ বলে — মিরান্দা, একি কাঁদছে তুমি? Miranda কান্না থামিয়ে জোর করে হাসতে হাসতে বলে, আমি যা দিতে চাই, তা দিতে পারছি না। যদি তুমি আমাকে বিয়ে কর তবে আমি কৃতার্থ হই। আর যদি তা না কর, আজীবন আমি তোমার সেবিকা হয়েই থাকবো। ফার্দিনান্দ আবেগ মাখানো কণ্ঠে বলে, বন্দী হৃদয় দিয়ে চিরকাল যেমন মুক্তিকে কামনা করে তেমনি করেই আমি তোমার হৃদয়ে থাকবো। এবার মিরান্দা চমকে উঠে বলে, বাবার অধ্যয়ন সম্পন্ন হয়েছে। বিদায় প্রিয়তম বিদায়৷ এদিকে ষ্টেকানো, ট্রিনকুলো আর ক্যালিবান মদ পান করে ঘুরে বেড়ায়। আর বলে যতক্ষণ মদ থাকবে ততক্ষণ জল খাবো না। ট্রিনকুলো নেশার ঘোরেই বলে ওই দ্বীপের পাঁচজন বাসিন্দার মধ্যে তিনজন আমরা আর দুজন যদি একই স্বভাবের হয় তবেই যে সব রসাতলে যাবে। এদিকে ক্যালিবান মদে ঝুঁদ হয়ে আছে। ষ্টেকানোও কোন কথা না বলে কেবল মদ পান করারই ইচ্ছা। ট্রিনকুলো অস্থির হয়ে বলে , তোমরা শুধুই শুয়ে শুয়ে মদ গিলবে।
ষ্টেকানো টলতে টলতে ক্যালিবানকে কিছু বলতে অনুরোধ জানালে ক্যালিবান বলে, আমি আপনার পা চাটতেও রাজী, কিন্তু ঐ লোকটার সেবা করবো না, সে খুবই কাপুরুষ। এই কথায় ট্রিনকুলো রেগে গিয়ে ক্যালিবানকে বহু অপমানসূচক কথা বলে। উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছে দেখে ষ্টেকানো ট্রিনকুলোকে সতর্ক করে দেয়। ক্যালিবান নতুন প্রভুকে অনুনয় বিন করে বলে, এক সময় আমি দ্বীপের এক নির্দয় শাসকের সেবা করতাম। আপনি হবেন এই দ্বীপের স্বাধীন রাজা। সেই যাদুকরটা যখন ঘুমিয়ে থাকবে তখন আমি আপনাকে নিয়ে যাব। অশরীরী এরিয়েলের চাতুরীতে ষ্টেকানো যেন শুনতে পায় ট্রিনকুলো তাকে মিথ্যুক বলছে। সে রাগতভাবে ট্রিনকুলোকে সাবধান করে বলে, এ ধরনের কথা দ্বিতীয়বার উচ্চারণ করলে একটা মাছ বানিয়ে ছাড়ব তোমাকে। টুকরো টুকরো করে কাটবো। ট্রিনকুলো তীব্র প্রতিবাদ জামিয়ে বলে, কোন কথা আমি তোমাকে বলিনি। ষ্টেকানো বিশ্বাস করে না। ঠিক তখনই আবার এরিয়েলের চাতুরীতে সে শোনে ট্রিনকুলো তাকে দ্বিতীয়বার মিথ্যাবাদী বলছে। আর যায় কোথায়? ষ্টেকানো ট্রিনকুলোকে ঠেঙ্গিয়ে সেখান থেকে দব করে দিল।
Answer ELN Privacy To be published, comments must be reviewed by the administrator
comment url