The Tempest Bangla Summary part-1
নাটকের নাম: দ্য টেম্পেস্ট
সাগর উত্তাল - উদ্দাম ভূমধ্যসাগর। বিকেল পড়তেই দেখা দিয়েছে ঝড়ের তাণ্ডব। ঝড়ের সঙ্গে মিতালী করে সমুদ্র যেন রুদ্ররূপ ধারণ করেছে। সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশালায়তন এক জাহাজ এগিয়ে চলেছে। জাহাজের যাত্রীরা ঝড়ের কবলে পড়ে একেবারে নাস্তানাবুদ। অনবরত শনশনানি শব্দ। বাজের আওয়াজের সঙ্গে রয়েছে বিদ্যুতের ঝলকানি। জাহাজে রয়েছেন যথাক্রমে নেপলসের রাজা অ্যালানেসো, রাজপুত্র ফার্দিনাণ্ড, রাজভ্রাতা সেবাষ্টিয়ান, মিলানের ডিউক অ্যান্টেনিও, বৃদ্ধ অমাত্য গজ্ঞালো আরও অনেকে। সবার মনেই কি হয় কি হয় ভাব। জাহাজের ক্যাপ্টেন ব্যাপার দেখে অধৈর্য্য হয়ে বড় মাঝিকে তাড়া দেন নাবিকরা যাতে খুব জোরে জোরে দাঁড় টানে। নইলে যে কোন মুহুর্তে সবাইকে তীরে আছড়ে পড়ে মরাও বিচিত্র নয়।
বড় মাঝি নাবিকদের সতর্ক করে, সাহসে ভর দিয়ে তাড়াতাড়ি টানতে, জাহাজের ওপর কোমর কসে পালটা তুলে ধরতে। নইলে তীর থেকে যদি জাহাজটা দূরে থাকে, তাহলে ঝড় যত আস্ফালন করুক না কেন, বিপদের কিছুমাত্রও কারণ থাকে না। তাই বারবার বলছে, জাহাজ মাঝ দরিয়ার নাও। এদিকে রাজা অ্যালানসো ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি বড় মাঝিকে সাবধান করে দিয়ে বললেন, লোকদের তাড়াতাড়ি কাজে লাগাও। এরপর তিনি ক্যাপ্টে নের খোঁজ করেন। অ্যান্টেনিও ক্যাপ্টে নের খোঁজে এলে সর্দার মাঝি দুজনকে অনুরোধ করে ডেকের নীচে যেতে। কারণ ঝড় স্বাধীন। সে রাজার অনুশাসন মানতে নারাজ। তাই কোন কথা না বলে কাউকে বিরক্ত না করে সোজা নীচে গিয়ে স্থির হয়ে থাকুন। অবস্থা সঙ্গীন, যে কোন সময় বিপদ ঘটতে পারে। Gonzalo তা শুনে তার বড় মালিককে বলতে থাকে আপনি জানেন আপনি কাকে জাহাজে করে নিয়ে যাচ্ছেন?
The Tempest Bangla Anubad
দ্য টেমপেস্ট ৩৭৩ বড় মাঝি নরম স্বরে উত্তর দেয়, জানি রাজা কে, আর আপনি তার বৃদ্ধ অমাত্য, তা ও জানি। যদি আপনার ক্ষমতা থাকে ঝড় থামান। আমরা তবে হাত তুলে বসে থাকি। আর যদি অক্ষম হন, তবে আপনাদের ধন্যবাদ দিই এতক্ষণ বেঁচে থাকার জন্য। আর যদি দুর্ঘটনা ঘটেই তার মোকাবিলা করার জন্য তৈরী থাকুন। সমুদ্রের ঝড় তো আর রাজার প্রজার নয় যে , হুকুম তামিল করবে। তাই বলছি, দয়া করে নিজের ঘরে যান। আমাদের মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করতে দিন। গজ্ঞালো তা শুনে আপন মনে বলতে থাকেন, বড় মাঝির যেমন বিকট চেহারা তেমনি ভাষাও কর্কশ। তার ভয়-ডর বলতে কিছু নেই। সে না মৃত্যুবরণ না করলে আমাদের জীবত থাকার আশা নেই, হায় ঈশ্বর কি হবে!
ক্রমে জাহাজে ত্রাসের সঞ্চার হতে সবাই আর্তনাদ করে ওঠে। বড় মাঝি জাহাজের মাস্তুল তুলে জাহাজকে বাতাসের অনুকূলে রাখতে হুঙ্কার ছাড়ে। সেবাষ্টিয়ান, অ্যান্টোনি ও গজ্ঞালোকে ডেকের ওপরে আসতে দেখে বড় মাঝি এবার বেশ রাগতস্বরে বলে এভাবে চীৎকার করে যদি অতীষ্ট করে তোলেন আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবো। জাহজটাকে কিছুতেই বাঁচানো যাবে না। তাই একটি প্রাণীরও বাঁচবার আশা থাকবে না। এবার সবাই নীচে এসে মিলিত হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে, মরতেই যদি হয় তবে শুকনো জমিতে যেন প্রাণটা যায়। তারপর বাধ্য হয়ে ঝড় তুফানের মাঝে সবাই নিজেদের ভাগ্য ঈশ্বরের ওপর ছেড়ে দিয়ে প্রার্থনারত অবস্থায় আসন্ন মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে। এক সময় ঝড়ের বেগ কমল। সবাই হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। বারো বছর আগেকার কথা। বারো বছর আগেকার মিলান। তখন প্রস্পেরো ছিলেন মিলানের ডিউক।
তিনি ছিলেন একজন সর্বশক্তিমান মান্যকর ব্যক্তি। ভালবাসতেন তাঁর একমাত্র ছোট ভাই অ্যান্টনিওকে। কিন্তু পরে তাঁর একমাত্র ক • মিরান্দার জন্মের পর তার ভালবাসা কেড়ে নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে। ডিউকের স্ত্রী মারা গেলে তিনি লেখাপড়া নিয়েই সর্বদা সময় কাটাতেন । ভাই অ্যান্টোনিওর হাতে জমিদারের সব ভার অর্পণ করে তিনি বিদ্যাশিক্ষায় ব্রতী হন। কাজে ডুবে থাকেন। কিন্তু অ্যান্টেনিও তার সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে। মিলানের ডিউক বৃদ্ধ প্রস্পেরো ও তার একমাত্র কন্যা মিরান্দা অ্যাণ্টেনিওর চক্রান্তের শিকার হন। ডিউক তখন বাধ্য হয়ে সরে আসেন সাধারণ জীবন থেকে। তিনি এবার পুরোপুরি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন গুহ্যবিদ্যা সাধনা আর মানসিক শক্তি অর্জনের সঙ্কল্পে। যে সব কর্মচারী ডিউকের অধীন ও আজ্ঞাবাহী ছিল অ্যাণ্টেনিও ক্রমশঃ তাদের পদোন্নতির মাধ্যমে নতুন করে সভা গড়ে তুললো নিজের মত করে। অ্যান্টোনিও একদিন আইভিলতর মত ডিউকের দেহে লুকিয়ে ছিল। সে সেখান থেকেই শোষণ করতে লাগল তার জীবনের পরিপুর্ণ রস। জীবনকে পুরোপুরি ভোগ করতে লাগল। অ্যান্টোনিও নিজের বুদ্ধি - কৌশলে হাতে পেল রাজকর্মচারী আর রাষ্ট্রযন্ত্র। সে হল সর্বেসর্বা
ডিউকের প্রতিনিধি তার ভাই অ্যান্টেনিও নিজেকেই ডিউক বলে জাহির করতে লাগল। আর সে নেপোলসের রাজার কাছ থেকে স্বাধীন রাজ্য খণ্ডকে বিসর্জন দিয়ে তার বশ্যতা স্বীকার করে নিল। ফলে ডিউকের চিরশত্রু অ্যান্টোনিও বশ্যতা স্বীকারের বদলে তাকেই অর্পণ করলেন সুন্দরী মিলান। অ্যান্টোনিও খুশী। এরকম একটা অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করবার অভিপ্রায়ে এক রাতে বিশ্বাসঘাতক সৈন্য সংগ্রহ করে মিলানের তোরণদ্বার খুলে দেয়। রাতের অন্ধকারে ডিউকের একমাত্র কন্যা মিরান্দা ও ডিউককে জোর করে বার করে নিয়ে এলো। তারা ডিউক আর তার কন্যাকে হত্যা করতে পারেননি। কারণ, পাছে ডিউকের হিতৈষীগণ তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। তাই তারা অতি গোপনেও ক্ষিপ্ততার সঙ্গে দুজনকে একটা ভাসমান নৌকায়। চাপিয়ে সমুদ্রে বেশ খানিকটা ভাসিয়ে নিয়ে এল।
এবার আগে আগে থেকে ঠিক করে রাখা একটা গাছের পচা গুড়ির খোলের মধ্যে তাদের নামিয়ে দিয়ে নৌকো নিয়ে পালিয়ে এল। এদিকে সেই পচা খোলে সাজসরঞ্জাম বলতে কিছুই ছিল না। এ দলে নেপলসবাসী একজন দয়ালু ব্যক্তি ছিলেন যিনি দয়াপরবশ হয়ে আহার্য, পানীয় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পোষাক - পরিচ্ছদ ও ডিউকের মহান প্রিয় সেই মহামূল্যবান বইগুলি দিয়েছিলেন। ঈশ্বরের করুণায় ডিউক ও তার কন্যা এই দ্বীপের অধিবাসী। এই গুহাই তাদের আবাসস্থল। এদিকে বারো বছর পরে মিরান্দা একদিন শোনে তার অতীত জীবনের করুণ কাহিনী। সে অপলক চোখে চেয়ে থাকে ডিউক প্রস্পেরোর বিষণ্ণ মুখের পানে। করুণ তার দৃষ্টি। সে এবার বলে, আমার বাবা ছিলেন মিলানের মহান ডিউক। আপনি তবে আমার পিতা নন? তবে কেমন—প্রস্পেরো সম্বিৎ ফিরে পেয়ে বলেন, তোমারই পিতা ছিলেন মিলানের ডিউক।
তোমার মা বলেছিলেন তুমি আমার কন্যা। হ্যা, আমারই কন্যা । তখন মিরান্দা পিতার কোলে মুখ লুকিয়ে শিশুর মত বলতে লাগল, পিতা, আমার মনে এখন দুটি প্রশ্ন জাগছে। এক, দয়াবান গজ্ঞালোকে আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। দুই, এই সমুদ্র ঝড় সৃষ্টি করার কারণ জানতে চাই । হঠাৎ দূর থেকে আর্তনাদ ভেসে আসে । মিরান্দা আর্তনাদ শুনে চমকে উঠলে প্রস্পেরো কন্যার পিঠে সস্নেহে হাত বুলিয়ে অশাম্ভ উত্তাল উদ্দাম সমুদ্রের দিকে তাকান। তারপর বলেন, আর বেশী কিছু জানতে চেয়ো না মিরান্দা । দৈবযোগে অতি আশ্চর্যভাবে আমার শত্রুদের এনে দেয় এই দ্বীপে। যাদুবিদ্যার বলে আমি জানতে পেরেছি যে, আমার চরম সৌভাগ্য নির্ভর করছে অতি শুভকর এক নক্ষত্রের ওপর। তা মোটেই আমি অবহেলা করবো না। তুমি এখন ক্লান্ত, নিদ্রা যাও – বিশ্রাম কর। বিশ্রামে ক্লান্তি দূর হবে। এরপর প্রস্পেরো গুহার বাইরে এসে আকাশের মেঘের দিকে তাকিয়ে হাত তোলেন। একটা হাওয়ায় কুণ্ডলী এসে হঠাৎ তার সামনে ঘুরপাক খেতে থাকে। প্রস্পেরো সেই দিকে তাকিয়ে বলতে থাকেন— ওগো, আমার প্রিয়তমা পত্নী এরিয়েল, অশরীরী—
তোমাকে আমি যা করতে আদেশ দিয়েছি ঝড়কে দিয়ে তুমি কি তা করিয়েছো? বল, করিয়েছো কি? ঠিক তখনই বাতাসের কুণ্ডলী থেকে রূপসী এরিয়েলের মূর্তিধারণ করল। অপূর্ব মূর্তি। ক্ষীণ কণ্ঠ শোনা গেল হে স্বামী প্রণাম। তোমার আদেশ মত আমি রাজপোতে চড়ে সামনে আর মাঝের পাটাতনে, কেবিনে কেবিনে বিস্ময় বিহ্বলতা জাগিয়েছি। আবার কখনো বিরক্ত হয়ে বহু জায়গায় আগুন ধরিয়েছি। জাহাজের মাস্তুল, আড়কাঠ আর পালের খুটিগুলো আলাদা আলাদা ভাবে জ্বালিয়েছি। প্রস্পেরো এবার ভাবাপ্লুত কণ্ঠে অশরীরী আত্মা এরিয়েলকে জিজ্ঞাসা করেন— জাহাজের একটি প্রাণীও কি তখন প্রকৃতিস্থ ছিল? এমন কেউ ছিল যার বুদ্ধিভ্রংশ হয়নি? হে স্বামী, একটি প্রাণীও প্রকৃতিস্থ ছিল না।
ওরা পাগলামির আবেশে তখন আচ্ছন্ন হয়ে সমুদ্রের জলে ঝাপিয়ে পড়েছিল। তবে কারো কোনো ক্ষতিই হয়নি। তাদের কারো পোষাকে একটা কাদার দাগও লাগতে দেইনি। সবাই নিরাপদে তীরে গিয়ে পৌঁছেছে। আর রাজপোতটিকে বিক্ষুব্ধ বারমুডা দ্বীপের নির্জন এক কোণে নাবিক সমেত লুকিয়ে রাখা হয়েছে। নাবিকেরা পাটাতনের ফাঁকে গাদাগাদি হয়ে সম্মোহনে ও ক্লান্তিতে ঘুমে অচেতন হয়ে আছে। এই দ্বীপে নিরাপদে যারা পৌঁছেছে আপনার আদেশ মত আমি তাদের বিভিন্ন দলে ভাগ করে ছড়িয়ে দিয়েছি চারিদিকে। রাজপুত্র ফার্দিনান্দকে আমি তীরে তুলেছি। সে সমুদ্রের সঙ্গে লড়াই করে খুবই ক্লান্ত। এবার অশরীরী আত্মা Prospero কে জিজ্ঞাসা করেন কাজ দেবার সময় আমাকে আপনি যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তা কিন্তু মোটেও করেন নি।
তোমার প্রতিশ্রুতির কথা মনে আছে কি? Prospero অভয় দিয়ে বলেন — হ্যা, কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমি মোটেই ভুলিনি তোমার যুক্তির কথা। বিদ্বিষ্টি সেই শক্তি ভুলে গেছো কি, কী যন্ত্রণা থেকে তোমাকে আমি মুক্ত করেছি? ভুলে গেছো কি সেই দৃষ্ট ডাইনী সাইকোরাক্সকে? কোথায় তার জন্ম জান? সে বিদ্বেষের ভারে কুঁজো হয়ে গেছিল। সব সময় তাই আমি তোমাকে মনে করিয়ে দিই, কি ছিলে তুমি? ডাইনী সাইকোরাক্সের জন্ম হয় আলজিয়ার্সে। সাংঘাতিক শয়তান। যাদুবিদ্যার কারণে সে মানুষের কাছে ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল। তাইতো তাকে সেখানকার লোকেরা তাড়িয়ে দিয়েছিল। শুধুমাত্র তার একটি কাজের জন্য হত্যা করেনি। এই ডাইনীর একটা সম্ভান হয়েছিল। আর নাবিক দ্বারা সে পরিত্যক্ত হয়েছিল। তবে তুমি সেই ডাইনীর ভৃত্য ছিলে। তার সেই সম্ভান বিকৃত অঙ্গ ক্যালিবান আজ আমারই ভৃত্যের কাজে নিযুক্ত।
এবার অশরীরী এরিয়েল দারুণ শিউরে গিয়ে ডাইনীর কথা মনে করে। তার লালসাপূর্ণ অসৎ কাজগুলো করতে না পারার জন্যে এত যন্ত্রণা দিয়েছিল। আর শেষ পর্যন্ত সেই ডাইনী যাদুবিদ্যাবলে ওকে একটা পাইন গাছের ফাটলের মধ্যে বন্দী করে রেখেছিল। দীর্ঘ বারো বছর ধরে বন্দী করে রাখে। যখন ডাইনী সাইকোরাক্স মারা গেল৷ বন্দীদশায় যেন শোনে নিজেরই কণ্ঠের আর্তনাদ। একদিন তার স্বামী হঠাৎ এলেন গাছের কাছে।
Answer ELN Privacy To be published, comments must be reviewed by the administrator
comment url