The Comedy Of Errors Bangla Summary Part-1
নাটকের নাম: কমেডি অব এররস
কিছুদিন ধরেই সিয়াকিউজ ও এফিয়াস এই দুটি দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ক্ষুণ্ন হয়ে পারস্পরিক বিবাদ ও ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যা হয়, বহু উলুখড়ের জীবন ও ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। নিজের দেশের সীমা লঙ্ঘন করে অন্য রাজ্যে প্রবেশ করলে রক্ষীরা তাকে গ্রেপ্তার করে লাঞ্ছিত করে। অনেককে মৃত্যুদণ্ডেও দণ্ডিত করা হয়। নিজের দেশের শাসকের কৃতকর্মের মাশুল দিতে হচ্ছে বেচারা প্রজাদের। সিরাকিউজ নিবাসী বৃদ্ধ সওদাগর ঈজিয়ানও এফিয়াস রাজ্যে প্রবেশ করার অপরাধে কারাগারে আটক আছেন। আজ ডিউক এসেছেন তাঁকে তাঁর দণ্ডাদেশ শোনাতে। হতাশ মনমরা বৃদ্ধ বণিক ডিউককে দেখেই অনুরোধ করলেন, যথাসম্ভব শীঘ্র যেন তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। বিদ্রুপের হাসি হেসে ডিউক বললেন, বিনা অপরাধে মানুষ মারার ব্যবসা তাঁর নয়। তবে সিরাকিউজের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হয়েছে, এক দেশের গাড়ী ঘোড়া অথবা মানুষ অন্য দেশে প্রবেশ করতে পারবে না।
কোন দেশের সওদাগর যদি তার বেসাতি নিয়ে অন্য রাজ্যে আসে, তবে তার মালপত্র আটক করে রাখা হবে। সে যদি এক হাজার মার্ক মুক্তিপণ দিতে পারে তবেই মালপত্রসমেত তাকে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এই বৃদ্ধ সওদাগরের মালপত্রের দাম তো একশো মাক হবে কিনা সন্দেহে , হাজার মার্ক মুক্তিপণ দিতে না পারলে তার মৃত্যুদণ্ড তো অনিবার্য। ডিউকের কৌতূহল হোলো, জেনে শুনে বৃদ্ধ কেন ফাসিকাঠে গলা বাড়িয়ে দিতে এসেছেন । এর উত্তরে সওদাগর ঈজিয়ান তার জীবনের মর্মান্তিক কাহিনী শোনালেন। জ্ঞানবয়স থেকেই ঈজিয়ান সওদাগরী নেশার সঙ্গে সংযুক্ত। একবার কার্যোপলক্ষে তাকে স্ত্রীসহ কিছুদিন এপিডেমনসে থাকতে হয়েছিল। সেখানে ব্যবসার পাট মিটতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছিল। এই সময় তার স্ত্রী এমিলিয়া যমজ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন । ছেলে দুটির চেহারা ছিল একেবারেই একরকম। সেই সময়ে প্রতিবেশিনী এক মহিলাও একজোড়া পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়ে মারা যান। সে দুটি শিশুর চেহারাও ছিল হুবহু একরকম। এমিলিয়া নিজের শিশুদের সঙ্গে ঐ মাতৃহারা অনাথ ছেলে দুটিকেও বুকে টেনে নেন। প্রতিবেশীরাও এ বিষয়ে তাঁকে সমর্থন করেন।
Comedy of Errors Bangla Anubad
সওদাগর ঈজিয়ান তার পুত্রদুটির নাম রাখেন বড় এণ্টিফোলাস ও ছোট এণ্টিফোলাস। আর পালিত শিশু দুটির নামকরণ করলেন বড় ড্রোমিও ও ছোট ড্রোমিও। শিশুর কলকাকলীতে মুখর তাঁদের জীবন বেশ ভালভাবেই কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু ঈজিয়ান লক্ষ্ম করলেন, এমিলিয়া আস্তে আস্তে বিষণ্ণ , মনমরা হয়ে উঠছেন। দীর্ঘপ্রবাস জীবন অসংযত হয়ে উঠেছে তার। দেশের মাটির জন্য মন কাঁদছে। তাগাদা দিয়ে স্বামীকে অস্থির করে তুলতে লাগলেন তিনি। দেশে ফিরে যেতেই হবে।
অবশেষে একদিন স্ত্রী ও চারটি শিশুসহ দেশে ফেরার জন্য জাহাজে উঠলেন ঈজিয়ান। এই বিশাল জাহাজ, অগণিত বিচিত্র পোশাক পরা মানুষজনের কর্মব্যস্ততা কৌতূহলী দৃষ্টি মেলে পরমানন্দে দেখতে লাগালো ছেলে চারটি। দুদিন দুরাত বেশ ভাল ভাবেই কাটলো। তৃতীয় দিন থেকে শুরু হল সামুদ্রিক ঝড়, ঘন মেঘে ছেয়ে গেল আকাশ। একটু একটু করে উত্তাল হয়ে উঠলো সমুদ্রের জলরাশি। জাহাজের নাবিকরা যাত্রীদের কথা না চিন্তা করে ছোট ছোট নৌকো করে নিমজ্জমান জাহাজ ছেড়ে সরে পড়লো। ঈজিয়ান একটি বিরাট মাস্তুলের একদিকে ছোট এণ্টিফেলাস , ছোট ড্রোমিওকে ও স্ত্রীকে শক্ত করে বাঁধলেন। অন্য প্রান্তে বাকি দুটি ছেলের সঙ্গে নিজেকে বাঁধলেন শক্ত করে। জাহাজ ডুবে গেল, কিন্তু মাস্তুলের কাঠের সাহায্যে তাঁদের ভেসে থাকতে অসুবিধে হোলো না। ঝড়ের তাণ্ডব সমানেই চলতে লাগলো। উত্তার সমুদ্রের অন্ধকার জলরাশির মধ্যে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ভেসে যেতে লাগলেন তাঁরা।
কয়েকঘণ্টা পরে অন্ধকারের বুকে একটু আলোর রেখা দেখা দিল। আশায়, আনন্দে নেচে উঠলো ঈজিয়ানের বুক। একটি জাহাজ এগিয়ে আসছে এদিকে । এমন সময় ভাগ্য তার শেষ খেলাটা খেলো। সমুদ্রে নিমজ্জিত পাথরে ধাক্কা খেয়ে দুটুকরো হয়ে ভেঙে গেল তাঁদের মাস্তুলটি। স্ত্রী এমিলিয়া দুটি শিশু সমেত তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন। জাহাজ সত্যিই আসছিল, তবে একটি নয়, দুটি। জলের সঙ্গে লড়াই করতে করতে ঈজিয়ান যেন অস্পষ্টভাবে দেখতে পেলেন, ছোট জাহাজটি থেকে একটি দড়ির মই দিয়ে তার স্ত্রী ও শিশু দুটিকে তুলে নেওয়া হোল।একটু পরে বড় জাহাজটিও তাঁদের কাছে এসে গেল।
সে জাহাজের নাবিকদের কৃপায় সওদাগর ও শিশু দুটি প্রাণে বেঁচে গেলেন । কিছুদিন পর জাহাজটি তাদের মিরাকিউজ বন্দরে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। দেশে ফিরে দীর্ঘদিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমে স্ত্রী ও শিশু দুটিকে সন্ধান করে চললেন সওদাগর। কিন্তু এই বিশাল পৃথিবীর জনারণ্যে কোথায় হারিয়ে গেছে তারা, সে খোঁজ মিললো না। বড় এন্টিফেলাস ও বড় ড্রোমিও এখন তরুণ যুবা। শিক্ষা দীক্ষা, কাজে কর্মে দুজনেই বেশ নিপুণ হয়ে উঠেছে। ড্রোমিও এণ্টিফেলাস - এর সর্বক্ষণের সহচর , একাধারে সে ভৃত্য ও বন্ধু দুই - এর ভূমিকায় পালন করে। এরা দুজনে একদিন ঠিক করলো, ঈজিয়ান বৃদ্ধ হয়েছেন, এবার মা ও ভাইদের খোঁজার ভারটা তারাই নেবে।
যে কথা সেই কাজ। বাড়ী ছেড়ে বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লো দুজনে। তারপর বেশ কিছুদিন তাদের কোনও খবর না পেয়ে উৎকণ্ঠিত ঈজিয়ান নিজেই বেরিয়ে পড়েছেন পথে। এখানে এসে জানতে পারলেন সিরাকিউজের লোকেদের এফিয়াসে প্রবেশ নিষিদ্ধ। প্রহরীদের হাতে ধরা পড়ে গেলেন। ঈজিয়ানের গল্প শুনে দুঃখিত হলেন ডিউক। কিন্তু তার কিছু করার নেই, আইন সবার ক্ষেত্রে সমান ভাবে প্রযোজ্য। তবু তিনি কৃপাপরবস হয়ে পনেরো দিন সময় দিলেন ঈজিয়ানকে। এর মধ্যেও যদি সে মুক্তিপণের টাকাটার ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে ভাল, নাহলে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে তাকে। সওদাগর ঈজিয়ানের গল্পের না জানা দিকটার দিকে এবার একটু আলোকসম্পাত করা যাক। এমিলিয়া , ছোট এণ্টিফেলাস ও ছোট ড্রোমিওকে যে জাহাজটি তুলে নিয়েছিল , সেটি আসলে ছিল জলদস্যুদের জাহাজ। এফিয়াস বন্দরে জাহাজ ভিড়িয়েই জাহাজের ক্যাপ্টেন এমিলিয়াকে তাড়িয়ে দিল, আর একজন ধনী বণিকের কাছে বিক্রী করে দিল ছেলে দুটিকে।
এই ধনী ব্যক্তিটি আবার বর্তমান ডিউকের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। একদিন তার বাড়িতে ফুটফুটে শিশু দুটিকে দেখে খুব ভাল লেগে গিয়েছিল ডিউকের। আত্মীয়ের কাছ থেকে তার কেনা দামের চেয়েও অনেক বেশী দাম দিয়ে কিনে নিলেন তাদের। কয়েক বছরের মধ্যেই তারা বীতিমত জোয়ান মরদ হয়ে উঠলো। ডিউক তাদের শিক্ষা দীক্ষা ও যুদ্ধকার্যে নিপুণ করে তুললেন। এণ্টিফেলাস ডিউকের সেনাদলে উচ্চপদে আসীন হয়ে অচিরেই জনপ্রিয় হয়ে উঠলো। স'র ড্রোমিও তার পাশে রইল সেবকের রূপে, ছায়ার মতই।
এফিয়াস নগরের এক ধনীর মেয়ে এণ্টিফেলাস - এর রূপে গুণে মুগ্ধ হয়ে গেলেন। অ্যাড্রিয়ানার বাবাও খুব ধুমধাম করে বিয়ে দিয়ে দিলেন দুজনের। মেয়েজামাই - এর থাকার জন্য একটা সুন্দর বাড়ীও করে দিলেন। এত যশ, অর্থ, প্রতিপত্তি, সুন্দরী গুণবতী স্ত্রী সবকিছু পেয়েও পরিপূর্ণ সুখ উপভোগ করতে পারে না এণ্টিফেলাস। বারে বারেই নিজের মার কথা মনে পড়ে। কোথায় গেলেন তার দুঃখিনী মা! নিয়তির বিধান এমনই বিচিত্র। একই শহরে একপ্রাতে কারান্তরালে মৃত্যুর প্রতীক্ষায় ধুঁকছেন সওদাগর ঈজিয়ান, আর অন্যপ্রাস্তে তারই পুত্র বিলাস - ব্যসনে দিন কাটাচ্ছে। কেউ - ই কারো খবর জানে না। এদিকে সবার অলক্ষ্যে ভাগ্যের চাকা একটু একটু করে ঘুরে চলেছে। এফিয়াস বন্দরে একদিন এসে ভিড়লো এক বিশালাতন জাহাজ।
Answer ELN Privacy To be published, comments must be reviewed by the administrator
comment url